বৃহস্পতিবার,

২১ নভেম্বর ২০২৪

|

অগ্রাহায়ণ ৬ ১৪৩১

XFilesBd

শিরোনাম

রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ শুরু শনিবার উজানের দেশগুলোর কাছে বন্যা পূর্বাভাসের তথ্য চাওয়া হবে : পানি সম্পদ উপদেষ্টা নোয়াখালীতে পানি কমছে, ত্রাণ বিতরণ অব্যাহত আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ ও নিবন্ধন বাতিলে হাইকোর্টে রিট দেশের ১২ সিটি কর্পোরেশনের মেয়রকে অপসারণ শেখ হাসিনা মেনন ইনুসহ ২৭ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হত্যাকান্ড, লুটপাট ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের বিচার হবে নিজেদের রাজাকার বলতে তাদের লজ্জাও করে না : প্রধানমন্ত্রী সাবেক আইজিপি বেনজীরের সম্পদ ক্রোকের নির্দেশ আদালতের হবিগঞ্জের কার ও ট্রাকের সংঘর্ষে নারীসহ নিহত ৫ যুদ্ধ ব্যয়ের অর্থ জলবায়ুর প্রভাব মোকাবেলায় ব্যবহার হলে বিশ্ব রক্ষা পেত: প্রধানমন্ত্রী বিএনপির বিরুদ্ধে কোনো রাজনৈতিক মামলা নেই: প্রধানমন্ত্রী প্রাণি ও মৎস্যসম্পদ উন্নয়নে বেসরকারি খাতকে এগিয়ে আসার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর বিএনপি নেতারা সন্ত্রাসীদের সুরক্ষা দেওয়ার অপচেষ্টা করছে : ওবায়দুল

আট দফা বাস্তবায়নের দাবিতে সংখ্যালঘুদের গণসমাবেশ ও মিছিল॥

তানভীর সুমন ।।

প্রকাশিত: ০০:৩৭, ৩ নভেম্বর ২০২৪

আপডেট: ১১:০৯, ৩ নভেম্বর ২০২৪

আট দফা বাস্তবায়নের দাবিতে সংখ্যালঘুদের গণসমাবেশ ও মিছিল॥

গেল কিছুদিন ধরেই সংখ্যালঘুদের ওপর চলছে লাগাতার নির্যাতন। হত্যা, নির্যাতন, জ্বালাও পোড়াও, লুটপাটসহ নানাভাবে আক্রমণ করা করা হচ্ছে । রাজনৈতিক ও সাম্প্রদায়িক আস্ফালন থেকে মুক্তির জন্য ৮ দফা বাস্তবায়নের দাবিতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গণসমাবেশ ও মিছিল করেছে বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের নেতৃত্বে ৪০ সংগঠনের সংখ্যালঘু ঐক্যমোর্চা। ৮ দফা দাবিকে অস্তিত্ব রক্ষার দাবি উল্লেখ করে দ্রুত মেনে নেওয়ার আহবানও জানান তাঁরা। 

শনিবার (২ নভেম্বর) বিকেলে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এই গণসমাবেশ ও মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। পরে বিক্ষোভ মিছিল রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র শিক্ষক মিলনায়তনে রাজু ভাস্করের সামনে শেষ হয়।

এসময় ‘এই দেশ ছাড়বো না- দেশটা কারো বাপের না,’ ‘এই স্বাধীন বাংলায়- বৈষম্যের ঠাই নাই’, ‘সংবিধানে বিদ্যমান সংখ্যালঘু ও জাতিগত বৈষম্য দূর কর’, ‘দেবোত্তর সম্পত্তি সংরক্ষণ আইন প্রণয়ন করতে হবে’, ‘ধর্মীয় রাষ্ট্র নয় ধর্ম নিরপেক্ষ রাষ্ট্র চাই’, ‘ধর্ম যার যার রাষ্ট্র সবার’, ‘অ্যাডভোকেট রাণা দাশগুপ্তসহ সকল সংখ্যালঘু নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে আনীত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে’ ইত্যাদি শ্লোগানে প্রকম্পিত হয় পুরো এলাকা। এমন সব ব্যানার ও প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করতেও  দেখা যায় অনুষ্ঠানে আসা বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের। 

গণসমাবেশে বক্তারা বলেন, আমরা সংখ্যালঘু নয়, বাংলাদেশি হিসেবে বাঁচতে চাই। তাই অনতিবিলম্বে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের স্বার্থ ও অস্তিত্ব রক্ষায় আট দফা দাবি বাস্তবায়ন করতে হবে। একই সঙ্গে সংখ্যালঘুদের সুরক্ষায় আইন প্রণয়ন, সংখ্যালঘু কমিশন গঠনের পাশাপাশি যে সব নেতৃবৃন্দের নামে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে, সেগুলো অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে। অন্যথায় কঠোর আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্তর বিরুদ্ধে করা হত্যা মামলা এবং ইসকনের চিন্ময় কৃষ্ণ ব্রহ্মচারীর বিরুদ্ধে হওয়া রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয় বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে। এছাড়াও সম্প্রতি আমাদের দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান ইসকন নিষিদ্ধের যে দাবি জানিয়েছিলেন, তার জন্য ক্ষমা চাইতে সময় বেধে দেন বক্তারা।

সংখ্যালঘুদের ৮ দফা দাবিনামার মধ্যে রয়েছে- সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন; জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন ও সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় গঠন,  অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইনের যথাযথ প্রয়োগে যাবতীয় আমলাতান্ত্রিক বাধা অপসারণ করে ট্রাইব্যুনালের রায়ের আলোকে জমির মালিকানা ও দখলভুক্তভোগীদের বরাবরে অনতিবিলম্বে প্রত্যর্পণ; জনসংখ্যার আনুপাতিক হারে সরকারে, সংসদে, জনপ্রতিনিধিত্বশীল সকল সংস্থায় অংশীদারিত্ব ও প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিতকরণ; দেবোত্তর সম্পত্তি সংরক্ষণে আইন প্রণয়ন; বৈষম্যবিলোপ আইন প্রণয়ন; পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির যথাযথ বাস্তবায়ন এবং তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ আইন ও পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ আইনের যথাযথভাবে কার্যকরীকরণ; হিন্দু সম্প্রদায়ের শারদীয় দুর্গাপুজোয় অষ্টমী থেকে দশমী ৩দিন, বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের প্রবারণা পূর্ণিমায় ১ দিন ও খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের ইস্টার সানডে’তে ১দিন সরকারি ছুটি ঘোষণা। 

একই সঙ্গে দেশব্যাপী হিন্দুদের ওপর যে অরাজকতা ও নৈরাজ্য চলছে তা থেকে রক্ষা পেতে সরকারের কাছে আহ্বান জানান নেতৃবৃন্দ। সমাবেশে বক্তব্য রাখে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বাসুদেব ধর, সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ বুদ্ধিস্ট ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ভিক্ষু সুনন্দ বড়ুয়া,  একুশে টেলিভিশনের চিফ নিউজ এডিটর ও অনুসন্ধানী পত্রিকা এক্সফাইলসের প্রধান সম্পাদক ড. অখিল পোদ্দার, মাইনোরিটি লিডার সমর ঘোষ, মাইনোরিটি অধিকারবিষয়ক বিশিষ্ট সাংবাদিক শিউলী সিকদার, বাংলাদেশ খ্রিস্টান অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি হেমন্ত কোরাইয়া ও ইসকনের সাধারণ সম্পাদক চারু চন্দ্র ব্রহ্মচারীসহ অন্যরা। 

বক্তারা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ও দেশের বিভিন্ন স্থানে নৈরাজ্য চলেছে। বিগত সরকারেও এদেশের হিন্দু বৌদ্ধ খৃষ্টান সম্প্রদায়ের সদস্যরা ভাল ছিল না। কিন্তু এবার যেটি হচ্ছে তা রীতিমতো দেশ থেকে উৎখাতের ষড়যন্ত্র। আর এটি করতেই প্রতিনিয়ত ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেয়া, দোকানপাট ব্যবসা প্রতিষ্ঠান লুট, হত্যা, অপহরণ, মিথ্যা অপবাদ দিয়ে পুলিশি নির্যাতন চলছে। অবিলম্বে এসব বন্ধ না হলে বৃহত্তর কর্মসূচি দেয়া হবে।