প্রতি বছরের মতো এ বছরও পটুয়াখালীর কলাপাড়া ও কুয়াকাটায় অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ঐতিহ্যবাহী রাস লীলা বা রাস উৎসব।
আজ সোমবার সন্ধ্যায় কুয়াকাটায় সমাবেশ ঘটবে হাজারো রাসভক্ত পুণ্যার্থীর। কুয়াকাটা রাধাকৃষ্ণ মন্দিরে সারা রাত ধর্মীয় অনুষ্ঠানের পর আগামীকাল ভোরে হবে পুণ্যস্নান।
কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতের পাশে শ্রী শ্রী রাধাকৃষ্ণ মন্দির ও কলাপাড়া শহরের শ্রী শ্রী মদন মোহন সেবাশ্রম সাজানো হয়েছে নতুন সাজে। রাস লীলায় আসা পুণ্যার্থীদের সার্বিক নিরাপত্তায় মাঠে থাকছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
কুয়াকাটা শ্রী শ্রী রাধাকৃষ্ণ মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক নীহার রঞ্জন মণ্ডল বলেন, 'রাস পূর্ণিমা উপলক্ষে ইতোমধ্যে ১৭ জোড়া যুগল প্রতিমা প্রস্তুত করা হয়েছে। প্যান্ডেল ও লাইটিংয়ের কাজও শেষ পর্যায়ে। অনেক পুণ্যার্থী কুয়াকাটায় আসতে শুরু করেছেন।'
কলাপাড়ার শ্রী শ্রী মদন মোহন সেবাশ্রমের পুরোহিত পরিমল দাস বলেন, 'মানবতা রক্ষায় দ্বাপর যুগে কংস রাজাকে বস করে পূর্ণিমা তিথিতে ঘটে রাধা-কৃষ্ণের পরম প্রেম। সেই থেকেই মূলত রাস উৎসবের প্রচলন। সত্য ও সুন্দরের জয়ের আকাঙ্ক্ষায় প্রায় ২০০ বছর ধরে কলাপাড়ায় রাস উৎসব উদযাপন করে আসছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।'
'এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল রোববার রাত ৯টায় অধিবাসের মধ্য দিয়ে শুরু হয় রাস পূজার আনুষ্ঠানিকতা। আজ বিকাল ৪টা ২৩ মিনিটে শুরু হবে পূর্ণিমা। থাকবে পরদিন মঙ্গলবার বিকাল ৪টা ১৯ মিনিট পর্যন্ত।'
'এই তিথিতে পূর্ব আকাশে সূর্য ওঠার সঙ্গে সঙ্গে কুয়াকাটা সৈকতে স্নান করবেন পুণ্যার্থীরা। এরপর তারা মন্দিরের আঙ্গিনায় ১৭ জোড়া রাধা-কৃষ্ণের যুগল প্রতিমা দর্শন করবেন। স্নানে পাপমোচন ও মনের বাসনা পূর্ণ হবে এমনটাই বিশ্বাস পুণ্যার্থীদের। দেশের সব অশুভ শক্তি দূর হবে এমনটাও প্রত্যাশা আমাদের।'
মহিপুর থানার ওসি আবুল খায়ের বলেন, 'রাস পূর্ণিমা উপলক্ষে বাড়তি টহল টিম মোতায়েন থাকবে। পর্যটন স্পটেও থাকবে পুলিশ।'
কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শংকর চন্দ্র বৈদ্য বলেন, 'কুয়াকাটায় পুণ্যার্থীদের সব ধরনের নিরাপত্তায় উপজেলা প্রশাসন সর্বোচ্চ সচেষ্ট আছে। রাসভক্তদের জন্য বিশুদ্ধ পানির সরবরাহ নিশ্চিত করা হয়েছে। স্যানিটেশন ব্যবস্থার জন্য অস্থায়ী ল্যাট্রিন স্থাপন করা হয়েছে। জরুরি স্বাস্থ্য সেবার জন্য থাকছে মেডিকেল টিম।'
কুয়াকাটা সৈকত পরিচ্ছন্ন রাখতেও বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।