জেলায় এবার ৮ হাজার ৫শ ৬০ মেট্রিক টন পাট উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে স্থানীয় কৃষি বিভাগ।
স্থানীয় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র বাসসকে জানায়, জয়পুরহাট জেলায় পাঁচ উপজেলা মিলে চলতি ২০২২-২৩ মৌসুমে পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৩ হাজার৪ শ ৯৫ হেক্টর জমিতে। লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে অর্জিত হয়েছে ৩ হাজার ১১৮ হেক্টর জমিতে। এরমধ্যে রয়েছে তোষা জাতের পাট ৩ হাজার ৯৩ হেক্টর ও দেশী জাত রয়েছে ২৫ হেক্টর। এতে পাটের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৮ হাজার ৫শ ৬০ মেট্রিক টন।পাট কাটার সময় অতিক্রান্ত হলেও নদী,নালা,খাল-বিল ও পুকুর ডোবায় পর্যাপ্ত পরিমান পানি না থাকায় পাট জাগ দেওয়া নিয়ে সমস্যায় পড়েছেন জেলার কৃষকরা। পাট জাগ দেওয়ার জন্যপানির অভাবে পাট কাটতে না পারা আবার অত্যধিক খারার কারণে জমিতে থাকা পাট শুকিয়ে যাচ্ছে। ফলে সোনালী আঁশ পাট চাষ করে লোকসানের মুখে এখন জয়পুরহাটের পাট চাষিরা। কিছু এলাকায় গভীর ও অগভীর নলকূপের সাহায্যে ডোবাতে পানি সেচ দিয়ে পাট জাগ দেওয়ার ব্যবস্থা করলেও প্রয়োজনে তুলনায় অপ্রতুল। বড় ও মাঝারী ধরনের পুকুর গুলোতে পানি থাকলেও মাছ চাষের কারণে সেখানে পাট জাগ দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এ এলাকার কৃষকরা পানিতে পাট জাগ দিতে অভ্যস্ত হওয়ায় কৃষি বিভাগ থেকে তেমন পরামর্শ দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না বলে জানান, জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো: এনামুল হক। পাট বীজ বপনের সময়ও এবার জমিতে পর্যাপ্ত পানি না থাকায়পাট বীজ বপনেও বিলম্ব হয়। সে কারণে জয়পুরহাট জেলায় এবার পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রাও অর্জন করা সম্ভব হয়নি বলে জানায় কৃষি বিভাগ।
কৃষি বিভাগ জানায়, সরকারের পাট জাত দ্রব্য ব্যবহার বাধ্যতা মূলক করাসহ পাটের মূল্য বৃদ্ধি, জ্বালানী হিসেবে পাট কাটিকে ব্যবহার ও পাট চাষে মাটির উর্বরতা শক্তি বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে জেলার কৃষকরা পাট চাষে আগ্রহী হয়ে ওঠেন। পাট চাষ সফল করতে কৃষি বিভাগ হাতে- কলমে চাষিদের প্রশিক্ষণ, উন্নত জাতের পাট বীজ সরবরাহ এবং প্রয়োজনীয় সারের মজুদ সন্তোষজনক পর্যায়ে রাখা সহ অন্যান্য কার্যক্রম গ্রহন করে। ২০২১-২০২২ খরিপ-১ মৌসুমে জেলায় পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২ হাজার ৯ শ ৮৫ হেক্টর জমি। চাষ হয়েছে ৩ হাজার ১১৫ হেক্টর জমিতে। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১১৩ হেক্টর বেশি । এরমধ্যে দেশী জাতের পাট রয়েছে ৩০ হেক্টর ও তোষা জাতের পাট রয়েছে ৩ হাজার ৮৫ হেক্টর। এতে পাটের উৎপাদন হয়েছিল ৩৮ হাজার বেল পাট। গত বছর প্রতিমন পাট বিক্রি হয় প্রকার ভেদে ২ হাজার ৫শ টাকা থেকে শুরু করে ৩ হাজার ২শ টাকা মণ পর্যন্ত। বাজারে পাটজাত দ্রব্যের ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায় বর্তমানে পাটের চাহিদা অন্যান্য সময়ের তুলনায় অনেক বেশি। সে কারণে দিন দিন জেলায় পাটের চাষ বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে বলে মনে করছে কৃষি বিভাগ।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ রাহেলা পারভীনজানান,চলতি ২০২২-২৩খরিপ-১ ফসল উৎপাদন মৌসুমে জেলায় ৩ হাজার ৪ শ ৯৫ হেক্টর লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ৩ হাজার ১১৮ হেক্টর জমিতে এবার পাট চাষ হয়েছে।এবার বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় পাট চাষও বিলম্ব হয়েছে ফলে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব হয়নি ।