একটু চোখ মিললেই রাজধানীর অলিতে গলিতে দেখা মিলবে এমন ময়লার গাড়ি। সকাল থেকে শুরু সারাদিন রুটিন করে, পালাক্রমে রাজধানীর বিভিন্ন রোডে দেখা মেলে এমন কয়েকশত ময়লার গাড়ি।
এই ভ্যানটির কয়েক ঘন্টা রোডের মাঝখানে দাঁড়িয়ে আছে রাজধানীর পান্থকুঞ্জ পার্কের পাশে। ভ্যানটি বিভিন্ন বাসাবাড়ি থেকে সংগ্রহ করা রান্নাঘরের আবর্জনা, কাঠালবাগান এলাকায় রাখা সিটি কর্পোরেশনের ময়লার ভাগাড়ে রাখা জন্য দাঁড়িয়ে আছে ভ্যানটি। মূল সড়কের একটি অংশ দখল করে সিটি কর্পোরেশনের কয়েকটি ময়লার ভ্যান রাখা।
এর ঠিক পাশে দিয়ে প্রতিনিয়ত কোনওমতে নাক-মুখ চেপে যাতায়াত করছে বিভিন্ন পথচারী। তাদের কন্ঠে প্রতিধ্বনিত হল প্রতিনিয়ত এই ভোগান্তির কথা। তারা জানালেন, প্রতিদিন এখানকার ময়লার অসহনীয় দুর্গন্ধের মধ্যেই তাদের কর্মস্থলে যেতে হয়। এর পাশেই রাজধানীর পান্থকুঞ্জ পার্ক। যেখানে ফুটপাতে কিংবা সড়ক বিভাজনে পথ শিশুদের মল ও মূত্র ত্যাগের দৃশ্য দেখেননি অথচ এই রাস্তায় চলাচল করে এমন মানুষ খুব কমই আছেন।
শুধু এই স্থানেই নয় রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে একই চিত্র।বিভিন্ন এলাকায় বাড়ি থেকে বের হলেই দেখা যায় রাস্তা ঘাটে ময়লা আবর্জনা। কলার খোসা, কাগজ, প্লাস্টিকের ব্যাগ অথবা বোতল দেখা যাবে না ঢাকায় এমন রাস্তা বা পাড়া খুব কমই আছে। চলতে পথে খোলা কন্টেইনারের উপচে পড়া আবর্জনাকে নাকে হাত দিয়ে পাশ কাটানো অথবা ময়লা বহনকারী ট্রাক বা ভ্যান থেকে কিছু উড়ে এসে গায়ে পড়বে কিনা সেই চিন্তা নিয়েই রাস্তা চলতে হয় বহু পথচারীদের।
রাজধানীর কাওরান বাজারের পান্থপুঞ্জ পার্কের গা ঘেঁষে সিটি কর্পোরেশনের ময়লার রাখার ভাগাড়। দিনের বেলাতেই ভ্যান থেকে ময়লা ঢালা হচ্ছে। গন্ধ শুধু রাস্তায় নয় উঁচু বিল্ডিং গুলোতে ছড়িয়ে পড়ছে। ভ্যানে করে ময়লা সংগ্রহ করে ট্রাকে তুলে দিচ্ছেন পাড়া ভিত্তিক আবর্জনা সংগ্রহকারীরা।
জনসংখ্যার ঘনত্বের দিক থেকে ঢাকা বিশ্বের সবচেয়ে ঘন বসতিপূর্ণ মহানগরী। বিভিন্ন প্রয়োজনে মানুষ গ্রাম ছেড়ে শহরে স্থানান্তরিত হওয়ার কারণে ঢাকা শহরের জনসংখ্যা অতি দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। তার সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে আবর্জনা,২০১৮ সালে একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, প্রতিদিন ঢাকায় প্রায় ৬,৫০০টন বর্জ্য উৎপাদিত হয়েছিল, যা ২০৩২ সাল নাগাদ ৮,৫০০ টন বৃদ্ধি পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এ অবস্থার সমাধানে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ সিটি কর্পোরেশনের পাশাপাশি নগরবাসীদের আরও সচেতন হতে হবে। বর্জ্য ব্যবস্থাপনা আর উন্নত করা এবং এর সঙ্গে সম্পৃক্ত সকল ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। তারা আরো বলেন নগরবাসীরা তাদের বাসা বাড়ি বা রান্নাঘর যতটা পরিষ্কারের গুরুত্ব দেন, ঠিক সমপরিমাণে গুরুত্ব দিতে হবে, নগরের প্রতিটি স্থানকে। তাহলেই একটি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ঢাকা গড়ে উঠবে।