২০২৪ এর ৫ই আগস্টের পর কোন বাধাহীন এবং প্রতিকার হীন অপরাধের ঘটনা ঘটে চলছে। জনগণের মৌলিক অধিকার পরিপন্থী ঘটনা ঘটে চলছে। বিভিন্ন নামের ভবন লুটপাট অগ্নি সংযোগ মানুষ হত্যার ভায়োলেন্স ঘটছে। এসব ঘটনার বিপরীতে কোন মামলা হচ্ছে না। ভিক্টিমরা কোন প্রতিকার পাচ্ছে না।ফৌজদারী অপরাধ তো চলছে বেহিসাবি। তবে দুঃখজনক হলেও সত্যি যে কেউ কেউ এসব ঘটনাকে জায়েজ করার জন্য বলছেন , আওয়ামী লীগের দুঃশাসনকাল এতই বিভীষিকাময় ছিল । জনগণ তাতে ক্ষুব্দ হয়ে এ সব আপরাধ করছে । ওনারা এটা যে আপরাধ। সোট স্বীকার ও করছেন। পুলিশ হেফাজতে থাকা ব্যক্তিরাও হমলা ও আহতের শিকার হচ্ছেন। এভাবে লাগাতার ফৌজদারী কার্যবিধি লংঘন করে চলছে কিছু চিহ্নিত মানুষ বিনা প্রতিকারে। আর বেশীরভাগ অপরাধ ঘটছে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সামনে। কেউ দায় দায়িত্ব নিতে দেখা যাচ্ছে না। সমগ্রদেশের একই হাল। ছাত্র জনতার অভুথ্যানের বিজয় কিন্তু একদিন এক মাস কিংবা এক বছরের ফসল নয়। ১৬ বছরের ফসল। এই ১৬ বছর ধরে বাংলাদেশের প্রতিটি মনুষ কোন না ভাবে নির্যাতিত হয়েছে। মজুর থেকে মুনাফা খোর কেউ বাদ যায়নী। সহজ সরল বিশ্বাস এটা। কেউ গবেষণা করতে চাইলে করেন ফলাফল এটাই। ছাত্র জনতার আন্দোলনের সফলতা নিয়ে ঐ সময়ের একটা লেখা ছিল ।সে বিষয় নিয়ে পরে আবার লিখব।
এ লেখাটি মুলত আইন শৃঙ্খলা নিয়ে। ছাত্র জনতার আন্দোলনের সফল পরিবর্তন কে অত্যন্ত সুপরিকল্পিত ভাবে একটি দুটি মহল কাজ লাগিয়ে গোটা দেশকে অপরাধের স্বর্গে পরিনত করেছে। ১৯৭১সালে মহান স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের নয় মাসে দেশের প্রশাসন এক দিনের জন্য ও অকার্যকর ছিল না। নয় মাসের যুদ্ধে নয়টি পুলিশের থানা আক্রান্ত হয়নি। একটি জেলা প্রশাসন ও পালায়নি। মুক্তি যোদ্ধারা কিংবা স্বাধীনতার কোন পক্ষ শক্তি কোন থানা ও জেলা প্রশাসনে হামলা করেনি। এমনকি ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ মহান বিজয় দিবসের কালে ওনা। ১৯৯০সাল। তিন মাসের লাগাতার সংগ্রামের ফসলের ছাত্র জনতার ও সকল রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহনের মধ্যে দিয়ে গনঅভ্যুত্থানে র পর কেবলই এরশাদের যুবভবন অক্রান্ত হয়েছিল। আর কোন অফিস আদালত ভবন লুটপাট অগ্নি সংযোগ হয়নি। সে আন্দলোন যারা শরিক ছিলো প্রত্যেকে বিজয়ের পরপরই আইন শৃঙ্খলা নিয়ে সমান ভাবে কাজ করেছিল।যার ফলে কোথাও কোন অঘটনের শিকার কেউ হয়নি।
২০২৪ সাল ৫ই অগাস্টের পর বা জুলাই থেকে ছাত্র জনতার আন্দোলনের সফল পরিবর্তন কে কেন্দ্র করে প্রায় সাড়ে ৪০০ পুলিশ থানা অক্রমন হয়েছে। থানা ভবন জ্বালিয়ে নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছে। অস্ত্র লুটপাট হয়ে গেছে। ডিসি অফিসে সহ অন্যান্য সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানর হামলা অগ্নি সংযোগ মানুষ হত্যা সংঘটিত হয়ে গেছে। এ লেখার সময় খবর আসলো সিলেটের মাজারে ও নারায়ণগঞ্জে দেওয়ানবাগীর আস্তানায় ছাত্র জনতার আন্দোলনের ব্যনারে হামলা হয়েছে আহত হয়েছে কয়েকজন।
গোটা দেশকে অপরাধ প্রবন করে তোলা হয়েছে। এর কবল থেকে এজাতি কবে মুক্তি পাবে বুঝতে পারছেনা ভিক্টিম মানুষ। নানা আসংকায় সংকিত মানুষ। কখন কার পাল্লায় পড়ে ইজ্জত হারাতে শুরু করে। এ ইজ্জত হারানোটাই মানুষের সাংবিধানিক রক্ষা কবচ। এখন মানুষ তার সাংবিধানিক অধিকার পরিপন্থী ঘটনার শিকার হচ্ছেন। নোবেল শান্তি বিজয়ী ড. মোহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্ব সরকারের কাছ থেকে সাংবিধানিক অধিকারটা চায়। কিন্তু অন্তঃবর্তী কালিন সরকারের কাছ থেকে জনগণের মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে না। যদি ছাত্র জনতার আন্দোলনের সফল পরিবর্তন অংশীদার রাজনৈতিক দল গুলো সরকার ও জনগনকে সহযোগীতা সহয়াতা না করে।
বাস্তবতা বড় নির্মম পরিস্থিতি কি বলছে। পরিবর্তনের সাথে সাথে আন্দোলনের শরিক যারা তারাই নামে বেনামে অপরাধ করছে। দখল। হামলা। মরধর তারাই করছেন। তা হলে ওনারা সরকার ও জনগন তথা প্রশাসনকে কিভাবে সহযোগিতা করবেন। আবার নির্বাচন আসলে উনারাই সরকার গঠন করতে চাইবেন। রাজনৈতিক দল গুলো কি করবে না করবে সেটা তাদের দর্শনের বিষয়। কিন্তু যারা সরকারের সাথে আছেন তাদের মহান কাজ হলো জনগনের সাংবিধানিক অধিকার ফিরিয়ে দিয়ে নিরাপত্তা বিধান করা। এক্ষেত্রে সরকারের বিন্দুমাত্র দুর্বলতা থাকলে সামনে মস্ত বড় খেসারত সরকার ও জাতিকে দিতে হবে। পুলিশ প্রশসন থেকে সকল প্রশাসন যন্ত্রকে এক যোগ কাজ করতেই হবে । এ সরকারকে সফল হতেই হবে ।
(লেখক কিবরিয়া চৌধুরী, সম্পাদক দৈনিক জাতীয় অর্থনীতি)