দ্বিতীয়বার মবজাস্টিসের শিকার হলেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় আওয়ামী ঘরানার প্রগতিবাদী মেধাবী শিক্ষক, লেখক, কলামিস্ট, বাংলা বিভাগের প্রফেসর ড. বাকী বিল্লাহ বিকুল।
গত ২৮ সেপ্টেম্বর’২৪ তারিখ যথারীতি তিনি সকাল ৮ টার গাড়িতে ক্যাম্পাসে গিয়ে বাংলা বিভাগের এম. এ শ্রেণির মডারেশন পর্ব শেষ করে ফোকলোর স্টাডিজ বিভাগের চতুর্থ বর্ষে ক্লাস নিতে চলে যান। ক্লাস শেষে বেলা ১১ টায় বাংলা বিভাগের একাডেমিক কমিটির সভায় যোগদান করেন। তিনি যখন করিডোর দিয়ে যাচ্ছিলেন তখন একদল শিক্ষার্থী ধর ধর দালাল ধর, বলে শ্লোগান দিতে থাকে। তবে তারা বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী নন।
এক পর্যায়ে যুদ্ধাংদেহী মিছিলটি ড. বিকুলের পিছু নিয়ে বাংলা বিভাগের চেয়ারম্যানের কক্ষের সম্মুখে জড়ো হয়ে কুরুচিপূর্ণ শ্লোগান দিতে থাকে। পরিবেশ উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। এর এক পর্যায়ে বাংলা বিভাগের শিক্ষকগণ ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে। এর মধ্যে বিভাগের জামায়াত-বিএনপি-বৈষম্যপন্থী শিক্ষার্থীরা বাংলা বিভাগের সভাপতিকে নিয়ে বিভাগীয় সভাপতির কক্ষে দফায় দফায় বৈঠকে মিলিত হয়। এর মধ্যে শ্লোাগানের ভাষা বদলে যেতে থাকে। ড. বিকুলের নামে কুৎসিত ভাষায় শ্লোগান পরিচালিত হয়।
একপর্যায়ে বৈঠকশেষে বাংলা বিভাগের সভাকক্ষে এসে সভাপতি প্রফেসর ড. রবিউল হোসেন ঘোষণা করেন, আন্দোলনরত মিছিলরত শিক্ষার্থীদের দাবী প্রফেসর ড. বাকী বিল্লাহ বিকুলকে এই মুহুর্তে বাংলা বিভাগ ছেড়ে চলে যেতে হবে। তারা আরও বলে আমাদের হাতে তাকে ছেড়ে দিন আমরা তাকে গেটের বাইরে রেখে আসবো। বাংলা বিভাগ পরে তাদের এই কথা বলে নিবৃত্ত করে যে, আমরা নিজেরাই তাকে নামিয়ে দিয়ে আসবো। এ সময় বাংলা বিভাগের সভাপতি পরিবহণ শাখায় ফোন দিয়ে রবীন্দ্র-নজরুল কলা অনুষদ সামনে বাদল ড্রাইভারের গাড়িটি ডেকে আনেন। এরই এক পর্যায়ে বিভাগ থেকে কয়েকজন শিক্ষকের মাধ্যমে মিছিলরত শিক্ষার্থীদের মাঝে অশ্রুসজল নয়নে বিভাগ থেকে বের হয়ে আসেন বিভাগের জনপ্রিয় শিক্ষক ড. বাকী বিল্লাহ বিকুল।
ড. বিকুলকে বহনকৃত মাইক্রোবাসটিতে বিভাগের সভাপতি প্রফেসর ড. রবিউল হোসেন, প্রফেসর গাজী মোঃ মাহবুব মুর্শিদ, প্রফেসর ড. রশিদুজ্জামান, প্রফেসর ড. মনজুর রহমান ও একজন কর্মকতা জনাব আশরাফুল আলম ও কর্মচারী মোঃ ইসমাইল গাড়িতে উঠে ড. বিকুলকে নিয়ে কুষ্টিয়ার উদ্দেশ্য রওনা হন। পথিমধ্যে ইবি গেটের বাইরে এসে শিক্ষকবৃন্দ নেমে যান, অন্য দুজন কর্মকর্তা প্রফেসর ড. বাকী বিল্লাহ বিকুলকে কুষ্টিয়াস্থ মজমপুরে তার নিজ বাড়িতে পৌঁছে দিয়ে যান।
উল্লেখ্য যে, কয়েকদিন আগে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন ভবনের নিচতলায় প্রফেসর ড. বাকী বিল্লাহ বিকুলকে হেনস্তার শিকার হতে হয়েছে। একই ব্যক্তিকে দুবার মবজাস্টিসের শিকার হতে হলো।