নড়াইলের কালিয়া উপজেলার পেড়লী ইউনিয়নের খড়ড়িয়া গ্রামের স্কুল শিক্ষক নারায়ণ চন্দ্র বিশ্বাসের বাড়িতে গত ৩১ আগস্ট রাত ২টার দিকে সশস্ত্র ডাকাতি হয়। পরদিন ১ সেপ্টেম্বর কালিয়া থানায় এমন লিখিত অভিযোগ করেন তিনি। কিন্তু ঘটনার দুসপ্তাহ পার হলেও থানা পুলিশ এর কোনো কূলকিনারা করতে পারেনি। থানায় অভিযোগ দেওয়ার পর মামলা না নেওয়ায় নারায়ণ চন্দ্রের পরিবার ভীতসন্ত্রস্ত অবস্থায় একেকটি রাত পার করছে।
স্থানীয়রা জানায়, নারায়ণ চন্দ্র বিশ্বাস এবং তাঁর স্ত্রী রত্না রানী বিশ্বাস দুজনেই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। গত ৩০ মে তাদের একটি সন্তান মারা যায়। সন্তানের মৃত্যুর শোক সইতে না পেরে মুষড়ে পড়েছেন তারা। এরই মধ্যে ডাকাতির ঘটনায়। এরপরও অবশ্য তারা তাদের পেশাগত দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন।
রত্না রানী বলেন, ‘আমার স্বামী যাদবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এবং আমি উত্তর খড়ড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। গত ৩১ আগস্ট রাত ২টার দিকে ঘরের পেছনের বারান্দার গ্রিল ভেঙে চার থেকে পাঁচ জন মুখোশধারী ডাকাত ঘরে প্রবেশ করে। তাদের হাতে দেশি অস্ত্র ছিল। অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে তারা ঘরের আলমিরা ভেঙে প্রায় এক লাখ টাকা, চার ভরি স্বর্ণের গহনা লুট করে।
স্বর্ণের গহনাসহ প্রায় চার লাখ টাকা লুট হয়েছে বলে দাবি করেন রত্না রানী।
পেড়লী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক সদস্য মো. তোকাব উদ্দীন শেখ বলেন, ‘মাস্টারের বাড়িতে ডাকাতির পর গ্রামের মানুষও ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছে। বিগত ৪০ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে এই গ্রামে কোনো ডাকাতি কিংবা চুরি হয়নি। ডাকাতদের মাস্টার বাবু চিনতে পারলেও ভয়ে তাদের নাম বলতে চাইছেন না। বর্তমানে এলাকার কয়েকজন ছেলেকে খুব দামি সিগারেট খেতে দেখা যাচ্ছে। তাদের পোশাক পরিচ্ছদসহ বাড়ি ঘরের অবস্থাও পাল্টে গেছে।’
নারায়ণ বিশ্বাস বলেন, ‘ডাকাতি হয়েছে, থানায় অভিযোগ দিয়েছি। দুই সপ্তাহ পার হয়েছে লিখিত অভিযোগের কোনো মূল্যায়নই হয়নি। তাহলে কি আমরা এ দেশে থাকতে পারব না? আমাদের কিছু হলে বিচার পাব না?’
শিক্ষক নারায়ণ বিশ্বাস এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে পুলিশ সুপারের প্রতি অনুরোধ জানান।
কালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ তাসমীম আলম বলেন, ‘অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হলে ডাকাতির যে আলামত সচরাচর দেখা যায়, তেমন কিছু ওই বাড়িতে দেখা যায়নি। ফলে মামলা নেওয়া সম্ভব হয়নি। মাস্টার বাবুকে লিখিত একটি অভিযোগ দিতে বলেছি, তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’