(ছবি:সংগৃহীত)
চলে গেলেন ভারতীয় বাংলা গানের কালজয়ী শিল্পী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়। গেলো কয়েকদিন ধরেই অসুস্থ হয়ে আইসিইউতে ছিলেন গীতশ্রী সন্ধ্যা মুখার্জি। সন্ধ্যায় কলকাতার একটি হাসপাতালে মৃত্যু হয় এই কিংবদন্তির।
সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়। সঙ্গীতের প্রবাদপ্রতীম। যিনি বাংলা ছবির স্বর্ণযুগে গত ৭০ বছর ধরে শ্রোতাদের অন্তর গহিনে জায়গা করে নিয়েছেন। দীর্ঘ সময় ধরে যিনি নানান ভাষার ছবিতে প্লেব্যাক করে সম্মান কুড়িয়েছেন। আধুনিক বাংলা ছবির পাশাপাশি সঙ্গীতের নান্দনিক পারঙ্গম গীতশ্রী সন্ধ্যা। বাংলা গানের সুবিশাল ঘরানায় যাঁর রাজত্ব স্বর্গীয় সুধায় ভরপুর। ১৯৪৫-এর আগস্ট মাসে ১৪ বছর বয়সের কিশোরী সন্ধ্যার প্রথম রেকর্ড বেরলো কলম্বিয়া থেকে। ভারতের বাতাসে ভেদিয়ে সে সুর পৌঁছালো অগুণতি মানুষের কানে কানে। এ গানের কথা আর সুরারোপ করেছিলেন গিরীন চক্রবর্তী। এর বছর দু’য়েকের মধ্যেই দু’টি বাংলা ছবিতেও নেপথ্যে গাইবার সুযোগ হয়ে গেল। শুধু তাই নয়, ওই একই বছর অর্থাৎ ১৯৪৮ এ তিনটি আধুনিক গানের রেকর্ড বেরুলো সন্ধ্যা মুখার্জির। ২০১১ সালে পশ্চিমবঙ্গের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান বঙ্গবিভূষণ লাভ করেন এই কিংবদন্তি। ১৯৭০ সালে জয় জয়ন্তী এবং নিশিপদ্ম চলচ্চিত্রে তাঁর গানের জন্য সেরা গায়িকার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান। ২০২২ সালের জানুাারি মাসে পদ্মশ্রী পুরস্কারপ্রাপ্ত হিসেবে তাঁর নাম ঘোষণা হলে তা প্রত্যাখ্যান করেছিলেন গণমানুষের সন্ধ্যা।১৯৩১ সালের ৪ অক্টোবর কলকাতার ঢাকুরিয়ায় রেল কর্মকর্তা নরেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় ও হেমপ্রভা দেবীর ঘরে জন্মগ্রহণ করেন সন্ধ্যা মুখার্জি। ছয় ভাইবোনের মধ্যে সবচেয়ে ছোট ছিলেন তিনি। ১৯৬৬ সালে বাঙালী কবি শ্যামল গুপ্তর সঙ্গে ঘর বেঁধেছিলেন।বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে তিনি ভারতীয় বাঙালি শিল্পীদের সঙ্গে গণ আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলেন। কারাবন্দী জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের মুক্তির আনুষ্ঠানিকতায় তাঁর গাওয়া 'বঙ্গবন্ধু তুমি ফিরে এলে' গানটি মুক্তি পায়। এমন অনেক সঙ্গীত বাংলার মানুষের হৃদয় গহিনে আজও দোলা দেয়। জয়তু সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়। যিনি কোটি মানুষের হৃদয় আকাশে সন্ধ্যা তারা হয়ে জ্বলে রইবেন বহুদিন।