স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী বীর মুক্তিযোদ্ধা বুলবুল মহলানবীশ আর নেই। বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায় আজ শুক্রবার ভোরে তিনি শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন। তার বয়স হয়েছিল ৭০ বছর। ১৯৫৩ সালের ১০ মার্চ বিক্রমপুরে জন্মগ্রহণ করেন কৃতী শিল্পী ও সংগঠক বুলবুল মহলানবীশ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও মাস্টার্স করেছেন। দেশে-বিদেশে শিক্ষকতা করেছেন দীর্ঘদিন। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর কলকাতার বালিগঞ্জের স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে প্রচারিত হয় ‘বিজয় নিশান উড়ছে ওই’গানটি। বাঙালির বিজয়ের ঐতিহাসিক ক্ষণে কালজয়ী গানটিতে কণ্ঠ দেয়া শিল্পীদের অন্যতম বীর মুক্তিযোদ্ধা বুলবুল মহলানবীশ। স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের সংস্কৃতি অঙ্গনের উজ্জ্বল প্রতিনিধি ছিলেন তিনি, সর্বোপরি দেশের সাংস্কৃতিক আন্দোলনের একজন পুরোধা ব্যক্তিত্ব।
বুলবুল মহলানবীশ একাধারে কবি ও লেখক, সংগীত, নাট্য ও আবৃত্তিশিল্পী হিসেবেও পরিচিতি পেয়েছিলেন। তিনি টেলিভিশন-বেতার-মঞ্চে শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতিবিষয়ক বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করতেন।
শেষকৃত্যানুষ্ঠান নিয়ে বুলবুল মহলানবীশের ভাইয়ের মেয়ে অভিনেত্রী ও নাট্যনির্দেশক জয়িতা মহলানবীশ জানান, ‘পিসিমনির ছেলে আমেরিকায় থাকেন, তাদের সাথে কথা বলে সিদ্ধান্ত হবে। দুই দিন পর শেষকৃত্য হবে। সময়টা চূড়ান্ত হলে আমরা জানিয়ে দেব। আপাতত মরদেহ রাখা হয়েছে রাজধানীর একটি প্রাইভেট হাসপাতালের হিমঘরে।’
নজরুলসংগীতশিল্পী বুলবুল মহলানবীশ নজরুল সংগীত শিল্পী পরিষদের সহ-সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, রবীন্দ্র একাডেমি। জাতীয় কবিতা পরিষদ, কচিকাঁচার মেলা, উদীচী, সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র শিল্পী পরিষদসহ বহু সাংস্কৃতিক ও সামাজিক সংগঠনে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছেন তিনি।
বুলবুল মহলানবীশের দুটি গানের এ্যালবাম রয়েছে। প্রকাশিত হয়েছে ১২টির বেশি গ্রন্থ। ‘মুক্তিযুদ্ধের পূর্ব পস্তুতি ও স্মৃতি ’৭১’ তার বহুল আলোচিত বই। সাহিত্য ও সংস্কৃতিতে অবদানের জন্য পেয়েছেন চয়ন স্বর্ণপদক, দেওয়ান মোহাম্মদ আজরফ ফাউন্ডেশন সম্মাননা, পশ্চিমবঙ্গের নজরুল একাডেমি সম্মাননা পদক।