নারায়ণগঞ্জে ওবায়দুল কাদের ও সাবেক মেয়র আইভিসহ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ১৩০ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হয়ে গার্মেন্টস কর্মী মিনারুল ইসলাম নিহত হওয়ার ঘটনায় এ মামলা দায়ের করা হয়।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, নারায়ণগঞ্জের সাবেক চার সংসদ সদস্য, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের সদ্য বিদায়ী মেয়র সেলিনা হায়াত আইভী, জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন ও বহিষ্কৃত মহানগর বিএনপি’র সাবেক সহ-সভাপতি আতাউর রহমান মকুলসহ ১৩০ জনের নেতা-কর্মীর নাম উল্লেখ করে এ মামলা দায়ের করা হয়েছে।
মঙ্গলবার রাতে নিহত মিনারুলের ভাই নাজমুল হক বাদী হয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় এ মামলাটি দায়ের করেন। বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে হামলা ও নিহতের ঘটনায় জেলার বিভিন্ন থানায় এ নিয়ে ৩২টি মামলায় এই প্রথম সাবেক মেয়র সেলিনা হায়াত আইভীর বিরুদ্ধে মামলা হলো। সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বকর সিদ্দিক মামলার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
মামলার এজাহারে প্রধান আাসামী করা হয় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে। নারায়ণগঞ্জের সাবেক সংসদ সদস্য-শামীম ওসমান, নজরুল ইসলাম বাবু, গোলাম দস্তগীর গাজী ও কায়সার হাসনাত, সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র সেলিনা হায়াত আইভী, সাবেক জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন, শামীম ওসমানের ছেলে অয়ন ওসমান ও ভাতিজা আজমেরী ওসমানসহ ১৩০ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। এছাড়াও অজ্ঞাতনামা আরো ৩০০/৪০০ জনকে আসামী করা হয়।
বাদী নাজমুল হক এজাহারে অভিযোগ করেন, ২০ জুলাই বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় সিদ্ধিরগঞ্জের আদমজী রুটের আমিন নগর পাওয়ার হাউজের সামনে আসামীরা ককটেল বিস্ফোরণ ও চারিদিকে গুলি ছুড়তে থাকে। সন্ধ্যা ছয়টার দিকে তার ভাই মিনারুলের শরীরে গুলি লাগলে সে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। তাকে উদ্ধার করে নারায়ণগঞ্জ ৩শ শয্যা হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
একই দিন বিকেলে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় আরও একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সৈয়দ মোস্তফা কামাল রাজু গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহতের ঘটনায় তার স্ত্রী আকলিমা আক্তার বাদী হয়ে এ মামলাটি দায়ের করেন।
মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ও সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমানসহ ৪০ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। এ মামলায় অজ্ঞাত আরো ১৫০/২০০ জনকে আসামী করা হয়।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলা ও গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহতের ঘটনায় এ পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জে ৩২টি মামলা দায়ের করার খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে। সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় এ দুটি মামলা ছাড়াও এর আগে আরও নয়টি মামলা দায়ের করা হয়। নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় দুইটি, ফতুল্লা থানায় আটটি, সোনারগাঁও থানায় চারটি, আড়াইহাজার থানায় চারটি ও রূপগঞ্জ থানায় চারটি মামলা দায়ের করা হয়।
এর মধ্যে ২৪ আগস্ট ঢাকায় আটক সাবেক বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীকে তিনটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।