সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ. আহ্কাম উল্লাহ্ সোমবার এক বিবৃতিতে বলেন, গতরাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে কোটা আন্দোলনকারীদের মিছিলে "আমরা সবাই রাজাকার" ও "তুমি কে আমি কে রাজাকার রাজাকার" শ্লোগান প্রদান করার ঘটনায় আমরা বিস্মিত ও হতবাক।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন, পাকিস্তানি শাসনামলে শিক্ষা সংকোচন নীতির বিরুদ্ধে লড়াই এবং ঐতিহাসিক ৬ দফা ও ১১ দফার পক্ষে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানের সূচনা করেছিল। বাঙালির অধিকার আদায়ের প্রতিটি সংগ্রামে জাতিকে সংগঠিত করার কারণে ১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ পাকিস্তানি সৈন্যবাহিনী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হলে আক্রমণ করে অসংখ্য ছাত্র-শিক্ষক-কর্মচারীকে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে।
১৪ই ডিসেম্বর ১৯৭১ পাকিস্তানি দখলদার বাহিনীর সহযোগী রাজাকার-আলবদর বাহিনী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রখ্যাত শিক্ষকদের বাসা থেকে ধরে নিয়ে রায়েরবাজার বধ্যভূমিতে নির্মমভাবে খুন করেছে। সেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে ছাত্রছাত্রীদের একাংশের কন্ঠে "আমরা সবাই রাজাকার" "তুমি কে আমি কে রাজাকার রাজাকার" স্লোগান শুনে আমরা বিস্মিত, হতবাক ও ক্ষুব্ধ।
যেকোনো বিষয়ে মত, ভিন্ন মত থাকতেই পারে। আলাপ-আলোচনা ও শান্তিপূর্ণ পন্থায় দাবি আদায়ের জন্য আন্দোলন করবার প্রত্যেক নাগরিকের গণতান্ত্রিক অধিকার রয়েছে। কিন্তু আন্দোলনের নামে মহান মুক্তিযুদ্ধ ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে অসম্মানজনক বক্তব্য প্রদান, কটাক্ষ করা একেবারেই অগ্রহণযোগ্য ও ঔদ্ধত্যের সামিল। মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী রাজাকার বাহিনীর পরিচয়কে আত্মপরিচয় হিসেবে শ্লোগান দেয়ার পর বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা বহন করার নৈতিক অধিকার থাকে কি?
আমরা আশা করি, যারা নানা কারণে বিভ্রান্ত হয়েছেন তারা মুক্তিযুদ্ধের মূলধারায় ফিরে আসবেন এবং কন্ঠে তুলে নিবেন সেই কালজয়ী শ্লোগান "জয় বাংলা"।