গোপালগঞ্জে মাদক মামলায় মাদকসম্রাট বাটুল ওরফে রবিউলসহ ৪ জনের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছে আদালত। রোববার (১৩ নভেম্বর) দুপুরে গোপালগঞ্জে অতিরিক্ত দায়রা জজ মো. আব্বাস উদ্দীন এ রায় ঘোষণা করেন। এই মামলায় একজনকে খালাস দিয়েছে ওই আদালত।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, মাদকসম্রাট গোপালগঞ্জ শহরের বেদগ্রামের মৃত ওসমান শেখের ছেলে বাটুল ওরফে রবিউল (৪৬), তার সহযোগী বেদগ্রামের সালাম শেখের ছেলে সুজন শেখ (৪১), একই গ্রামের মৃত হারুন মৃধার ছেলে মো. রফিক মৃধা (৩৯) ও গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার রঘুনাথপুর চরপাড়া গ্রামের মৃত কাদের সিকদারের ছেলে জাকির সিকদার (৪৫)।
রায় ঘোষণার সময় বাটুল ও সুজন শেখ আদালতে উপস্থিত ছিলেন। সাজাপ্রাপ্ত রফিক মৃধা ও জাকির সিকদার পলাতক রয়েছে। অপর আসামি বেদগ্রামের বটতলা এলাকার সরোয়ার জানের ছেলে শেখ জিরুল্লাহ (৪০) খালাস পেয়েছে।
বেঞ্চ সহকারী মো. মাহবুবুর রহমান মামলার বরাত দিয়ে জানান, ২০১১ সালের ১০ জুলাই সোনা বেগম ও শেখ জিরুল্লাহকে ডিবি পুলিশ ৩০ বোতল ফেন্সিডিল সহ গ্রেফতার করে। এরপর তাদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী ডিবি পুলিশ ২য় দফায় অভিযানে বের হলে মাদক সম্রাট বাটুল বেদগ্রাম থেকে নৌকায় গোলাবাড়িয়া বিলে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এসময় ডিবি পুলিশ গোলাবাড়িয়া পৌছালে বাটুল ও তার সহযোগীরা বস্তাবন্দি ফেন্সিডিল পানিতে ফেলে পালিয়ে যায়। ডিবি পুলিশ সেখান থেকে ৪৯৭ বোতল ফেন্সিডিল ও দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার করে।
ওইদিন এ ঘটনায় মাদ্রকসম্রাট বাটুল ওরফে রবিউল, সোনা বেগম, জিরুল্লাহ, সুজন শেখ, মো. রফিক মৃধা, জাকির সিকদারকে আসামি করে ডিবি পুলিশের এসআই মো. শাহাদত হোসেন গোপালগঞ্জ থানায় একটি মাদক মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের কিছু দিন পর সোনা বেগম মৃত্যুবরণ করেন।
দীর্ঘ তদন্ত শেষে মামলার তদন্তাকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের এসআই মো. মোয়াজ্জেম হোসেন সোনা বেগমকে বাদ দিয়ে ৫ আসামির বিরুদ্ধে ২০১১ সালের ৬ আগস্ট আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন।
স্বাক্ষ্যপ্রমাণ গ্রহণ শেষে বিজ্ঞ বিচারক ৪ আসামিকে দোষী সাব্যস্ত মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন। ১ আসামিকে বেকসুর খালাস প্রদান করেন।
রাষ্ট্রপক্ষে এপিপি মো. শহিদুজ্জামান খান ও আসামি পক্ষে এমএ আলম সেলিম, মো. রবিউল আলম, মো. এনামুল হক মামলাটি পরিচালনা করেন।
ওই আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. মাহবুবুর রহমান আরও জানান, বাটুল ওরফে রবিউলের বিরুদ্ধে ৭টি মাদক মামলা রয়েছে বলে চার্জশীটের পিসিআর এ উল্লেখ রয়েছে। প্রায় ৮ মাস আগে একটি মাদক মামলায় বাটুলকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করে গোপালগঞ্জের অতিরিক্ত জজ আদালত।
জেলা পুলিশের তালিকায় মাদক কারবারি হিসেবে তার নাম শীর্ষে রয়েছে।