নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান আসাদের মারধরে আহত ছাত্রলীগ নেতা জামিউল আলিম জীবন (২১) মারা গেছেন।
শুক্রবার (২৩ সেপ্টেম্বর) রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। জামিউল আলিম জীবন একই উপজেলার রামশার কাজিপুর এলাকার মো. ফরহাদ হোসেনের ছেলে।
রামেক হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল ডা. শামীম ইয়াজদানি বলেন, ‘গত সোমবার জীবনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর তাকে আইসিইউতে নেওয়া হয়। সেখানেই আজ দুপুরে মারা যান তিনি।’
নাটোর-২ (সদর-নলডাঙ্গা) আসনের সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুল বলেন, ‘জীবন আজ নয়, মারা গেছে গত মঙ্গলবার। চেয়ারম্যান আসাদকে বাঁচাতে নাটক সাজিয়ে তাকে মৃত ঘোষণা না করে আইসিইউতে রাখা হয়েছিল।’
তিনি আরও বলেন, লাশ নিয়ে এই নাটক কারা সাজিয়েছে, তা প্রকাশ করতে হবে। জেলা আওয়ামী লীগ আসাদকে বাঁচানোর চেষ্টা করছে বলেও দাবি করেন তিনি।
জানা গেছে, গত সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) উপজেলা চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান আসাদের নানা অনিয়ম নিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক জামিউল আলিম জীবন।
বিষয়টি কেন্দ্র করে ওই দিন সন্ধ্যায় নলডাঙ্গা উপজেলার রামশাকাজিপুর আমতলী বাজারে জীবনকে ডেকে নিয়ে লোহার রড ও লাঠি দিয়ে পেটান উপজেলা চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান আসাদ, তার দুই ভাই ও তাদের সহযোগী আরও ৪-৫ জন।
এ সময় বাধা দেওয়ায় জীবনের বাবা ফরহাদ হোসেনকেও পেটানো হয়। পরে আহত অবস্থায় জীবন ও তার বাবাকে নাটোর সদর হাসপাতাল ও পরে রাজশাহীতে স্থানান্তর করা হয়। জীবনের বাবা ফরহাদ হোসেনকে পরদিন ছাড়পত্র দেন চিকিৎসকরা। জীবনের অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় তাকে আইসিইউতে রাখা হয়।
এ ঘটনায় মঙ্গলবার (২০ সেপ্টেম্বর) জীবনের মা জাহানারা বেগম বাদী হয়ে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান আসাদ, তার বড় ভাই ফয়সাল শাহ ফটিক ও অপর ভাই আলিম আল রাজি শাহের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরও পাঁচজনের বিরুদ্ধে নলডাঙ্গা থানায় একটি এজাহার দায়ের করেন। এ ঘটনার পর থেকেই পলাতক রয়েছেন উপজেলা চেয়ারম্যান আসাদ।
নলডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। যে কোনও ধরণের বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে সতর্ক অবস্থায় রয়েছে পুলিশ।’