সাম্প্রতিক বন্যা পরিস্থিতিতে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাসমূহ পরিদর্শন করছেন নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল এম নাজমুল হাসান। তিনি গত মঙ্গলবার বন্যা কবলিত ফেনী জেলার ফুলগাজী উপজেলা পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনকালে তিনি ফুলগাজী উপজেলার বিভিন্ন স্থান সরেজমিনে পরিদর্শন করে জনসাধারণের খোঁজ-খবর নেন এবং নৌ কন্টিনজেন্ট, স্থানীয় প্রশাসন ও আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট সকলের সাথে মতবিনিময় করেন। এরপর তিনি নৌবাহিনীর বোটযোগে ফেনীর সামগ্রিক বন্যা কবলিত এলাকা পর্যবেক্ষণ করেন। এ সময় উদ্ধার, ত্রাণ সরবরাহ ও চিকিৎসা কার্যক্রমে নিয়োজিত নৌ সদস্যদের প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা প্রদান করেন। পরিদর্শনে সহকারী নৌবাহিনী প্রধান (অপারেশন্স), ঊর্ধ্বতন নৌ কর্মকর্তা, স্থানীয় প্রশাসন ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
দেশের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশনায় Immediate Response Phase এ বাংলাদেশ নৌবাহিনী দ্রুততার সাথে বন্যা কবলিত এলাকায় উদ্ধার, ত্রাণ ও চিকিৎসা সেবা কার্যক্রম পরিচালনা শুরু করে, যা অদ্যাবধি চলমান রয়েছে। নৌবাহিনী প্রয়োজনীয় উদ্ধার সামগ্রী, বোট, লাইফ জ্যাকেট ও ডুবুরিসহ তিন শতাধিক নৌ সদস্য উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনা করে যাচ্ছে। নৌ কন্টিনজেন্টগুলো এ পর্যন্ত কয়েক হাজার মানুষকে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে আশ্রয়ের ব্যবস্থা করেছে। সেই সাথে বন্যা কবলিত এলাকার গবাদিপশু ও অতি প্রয়োজনীয় সামগ্রীসমূহ নিরাপদ স্থানে স্থানান্তর করেছে। এছাড়াও চট্টগ্রামের মিরসরাই, খুলনার পাইকগাছা, ভোলার রাজাপুর এলাকায় নৌবাহিনীর অন্যান্য কন্টিনজেন্টসমূহ বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় ও মানবিক বিপর্যয় রোধে কাজ করে যাচ্ছে। ফিল্ড হাসপাতাল স্থাপনের মাধ্যমে নৌবাহিনী বন্যা দুর্গত এলাকায় চিকিৎসা সেবা প্রদান করছে যা বন্যা পরবর্তী বিভিন্ন রোগের প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় কাজ করবে।
পরিদর্শনকালে নৌবাহিনী প্রধান বলেন- আকস্মিক বন্যায় ফেনী জেলার বিপর্যস্ত এলাকায় সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর সদস্যরা উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করছে। স্থানীয় প্রশাসন, ছাত্র-জনতা, সশস্ত্র বাহিনী কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এক সাথে কাজ করলে খুব শীঘ্রই এ অবস্থা হতে ঘুরে দাঁড়ানো সম্ভব হবে। পরিস্থিতি বিবেচনায় যত দিন প্রয়োজন হবে তত দিন নৌবাহিনীর চিকিৎসা সেবা কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। নৌবাহিনী চিকিৎসা দলের সাথে অনেকেই কাজ করতে আগ্রহ প্রকাশ করায় তিনি তাদের সাধুবাদ জানান। তিনি আরও বলেন- পুনর্বাসন একটি দীর্ঘ মেয়াদি প্রক্রিয়া বিধায় সরকার, স্থানীয় প্রশাসন, সশস্ত্র বাহিনী সমন্বিত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে কাজ করবে। এ ব্যাপারে জনসাধারণকে ধৈর্য ধরার ও সর্বাত্মক সহযোগিতা করার আহবান জানান। এছাড়াও তিনি বলেন- সঠিক লোক যেন সঠিক সহায়তা পায় এবং ত্রাণ সামগ্রীর সুষম বণ্টন হয় তা নিশ্চিত করতে হবে। নৌবাহিনী সব সময় মানুষের পাশে ছিল এবং থাকবে। বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর সাথে কোস্টগার্ড, বিজিবি, র্যাব, পুলিশ, শিক্ষার্থী, বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও স্থানীয় জনগণ স্বতঃস্ফুর্তভাবে বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় অংশগ্রহণ করায় তিনি সকলকে ধন্যবাদ জানান।