শনিবার,

১৯ এপ্রিল ২০২৫

|

বৈশাখ ৬ ১৪৩২

XFilesBd

শিরোনাম

রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ শুরু শনিবার উজানের দেশগুলোর কাছে বন্যা পূর্বাভাসের তথ্য চাওয়া হবে : পানি সম্পদ উপদেষ্টা নোয়াখালীতে পানি কমছে, ত্রাণ বিতরণ অব্যাহত আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ ও নিবন্ধন বাতিলে হাইকোর্টে রিট দেশের ১২ সিটি কর্পোরেশনের মেয়রকে অপসারণ শেখ হাসিনা মেনন ইনুসহ ২৭ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হত্যাকান্ড, লুটপাট ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের বিচার হবে নিজেদের রাজাকার বলতে তাদের লজ্জাও করে না : প্রধানমন্ত্রী সাবেক আইজিপি বেনজীরের সম্পদ ক্রোকের নির্দেশ আদালতের হবিগঞ্জের কার ও ট্রাকের সংঘর্ষে নারীসহ নিহত ৫ যুদ্ধ ব্যয়ের অর্থ জলবায়ুর প্রভাব মোকাবেলায় ব্যবহার হলে বিশ্ব রক্ষা পেত: প্রধানমন্ত্রী বিএনপির বিরুদ্ধে কোনো রাজনৈতিক মামলা নেই: প্রধানমন্ত্রী প্রাণি ও মৎস্যসম্পদ উন্নয়নে বেসরকারি খাতকে এগিয়ে আসার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর বিএনপি নেতারা সন্ত্রাসীদের সুরক্ষা দেওয়ার অপচেষ্টা করছে : ওবায়দুল

কবি রফিক আজাদের বাড়ি সমাচার! আসলে কী হয়েছে?

মাসুদুল হাসান রনি

প্রকাশিত: ২২:৩৩, ১৮ এপ্রিল ২০২৫

কবি রফিক আজাদের বাড়ি সমাচার! আসলে কী হয়েছে?

সারাদিন সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘুরছে সরকার কবি রফিক আজাদের বাড়ি ভেঙে দিয়েছে! সবাই সরকারের ওপর দোষ চাপিয়ে মুন্ডুপাত করছে। আসল ঘটনা কি, কেউ খোঁজ নিচ্ছে না। কান নিয়েছে চিল, দৌড়াচ্ছে সব চিলের পিছু। 

ধানমন্ডির এই বাড়ি কবির ক্রয়সুত্রে বাড়ি নয়। কিংবা পৈত্রিকসুত্রে প্রাপ্ত তাও না।  তাহলে এই বাড়ির জমির মালিক কে?  

বাড়ির মালিক সরকার। ১৯৮৮ সালে একতলা এই বাড়িটি রফিক আজাদের স্ত্রী কবি দিলারা হাফিজের নামে সাময়িকভাবে বরাদ্দ দেয় ‘এস্টেট অফিস’। দিলারা হাফিজ তখন ইডেন কলেজে প্রভাষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। চার ইউনিটের বাড়িটির একটিতে থাকছেন কবির স্ত্রী দিলারা হাফিজ। বাকি তিন ইউনিট অন্যদের নামে বরাদ্দ রয়েছে।

এস্টেট অফিসের সহকারী পরিচালক এম বেগমের স্বাক্ষর করা এ বরাদ্দনামায় উল্লেখ করা হয়, এই বরাদ্দের দ্বারা বাসার ওপর কোনো অধিকার বর্তাবে না, তবে পরবর্তী আদেশ না হওয়া পর্যন্ত সেখানে বসবাস করতে পারবেন।

বুঝুন, তার মানে সরকার তাকে চিরদিনের জন্য বাড়ি লিখে দেয়নি। অর্থাৎ সরকারের প্রয়োজনে বরাদ্দকৃত ব্যক্তিকে উচ্ছেদ করতে পারে। এক্ষেত্রে উচ্ছেদ হয়নি। কবি রফিক আজাদের স্ত্রীর বাড়ির পিছনের একাংশ ভেঙেছে। কেন ভেঙেছে লেখার শেষাংশটুকু পড়ে জেনে নিন।

বুধবার বাড়িটির পূর্বাংশের দুটি ইউনিট গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। কেন দেয়া হলো? 

তবে শুনুন আসল কাহিনী। 

এই বাড়িটি নিয়ে মামলা রয়েছে। জনৈক সৈয়দ নেহাল আহাদ নামের এক ব্যক্তি মালিকানা দাবী করে ২০১২ সালে মামলা করেন। এবং তিনি মালিকানার স্বপক্ষে রায় পান। কিন্ত সৈয়দ নেহাল, হাউজিং অ্যান্ড পাবলিক ওয়ার্কস এবং গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়কে বিবাদী করে মামলা করেন দিলারা হাফিজ। এর ফলে আদালত বাড়িটির ওপর স্থিতাবস্থা দেন। পরের বছর এই স্থিতাবস্থা স্থায়ী করেন আদালত। আগামী মে মাসে মামলার শুনানি আছে।

যেহেতু মামলা চলমান এবং স্টে অর্ডার দেয়া আছে। সেই প্রেক্ষিতে বাড়ি গুড়িয়ে দেয়া অন্যায়।

বাড়ি গুড়িয়ে দেয়া প্রসঙ্গে সরকার কি বলে?

এ বিষয়ে জানতে দ্যা ডেইলি স্টার হতে যোগাযোগ করা হয় জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের মিরপুর বিভাগ-২ এর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তৈয়ব-উর-রহমান আশিক এর সাথে। তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, অভিযানে কবি রফিক আজাদের বাড়িটি ভাঙা হয়নি।

তিনি বলেন, 'সেখানে চারটি একতলা ভবন রয়েছে, যার সবগুলো ভাড়াটিয়াদের দখলে। এর মধ্যে কবি রফিক আজাদের বাসভবনসহ দুটি ভবনের বিষয়ে হাইকোর্টের স্থিতাবস্থার আদেশ আছে। আমরা রফিক আজাদের বাড়ির পেছনের দুটি ভবন ভেঙে ফেলেছি।'

আশিক বলেন, 'কবি রফিক আজাদের বাসভবনের কোনো অংশ ভাঙা হয়নি। তবে সংশ্লিষ্ট নির্বাহী প্রকৌশলী তাকে আশ্বস্ত করেছেন, তার বাড়ির সীমানা প্রাচীর পুনর্নির্মাণ করা হবে।'

সীমানা পুন: নির্ধারণে কবি রফিক আজাদের বাড়ির একাংশ ভেঙে দেয়া হয়েছে। সরকার সীমানা পুনর্নির্মাণ করবে, সেটাও জানিয়েছে। 

কি বুঝলেন? 

এতো লাফানোর আগে আপনারা একটু খবর নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়া কাঁপিয়ে দিয়েন। সেটা অনেক গ্রহনযোগ্য হবে। না হলে ভুয়া তথ্য ছড়িয়ে অস্থিরতা তৈরির দায় এড়াতে পারবেন না।

সবশেষে 

আমিও চাই কবির স্ত্রীর বাড়ির সীমানা পুন:নির্ধারণ শেষে দ্রুত পুন:নির্মাণ করে দেয়া হোক। যেহেতু বীর মুক্তিযোদ্ধা কবি রফিক আজাদ  স্ত্রীর কল্যানে এই বাড়িতে থেকেছেন, তার স্মৃতি বিজড়িত এই বাড়ি। একই সাথে দাবী জানাই বাড়িটি চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত করে দেয়া হোক।