সোমবার,

০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

|

মাঘ ২০ ১৪৩১

XFilesBd

শিরোনাম

রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ শুরু শনিবার উজানের দেশগুলোর কাছে বন্যা পূর্বাভাসের তথ্য চাওয়া হবে : পানি সম্পদ উপদেষ্টা নোয়াখালীতে পানি কমছে, ত্রাণ বিতরণ অব্যাহত আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ ও নিবন্ধন বাতিলে হাইকোর্টে রিট দেশের ১২ সিটি কর্পোরেশনের মেয়রকে অপসারণ শেখ হাসিনা মেনন ইনুসহ ২৭ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হত্যাকান্ড, লুটপাট ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের বিচার হবে নিজেদের রাজাকার বলতে তাদের লজ্জাও করে না : প্রধানমন্ত্রী সাবেক আইজিপি বেনজীরের সম্পদ ক্রোকের নির্দেশ আদালতের হবিগঞ্জের কার ও ট্রাকের সংঘর্ষে নারীসহ নিহত ৫ যুদ্ধ ব্যয়ের অর্থ জলবায়ুর প্রভাব মোকাবেলায় ব্যবহার হলে বিশ্ব রক্ষা পেত: প্রধানমন্ত্রী বিএনপির বিরুদ্ধে কোনো রাজনৈতিক মামলা নেই: প্রধানমন্ত্রী প্রাণি ও মৎস্যসম্পদ উন্নয়নে বেসরকারি খাতকে এগিয়ে আসার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর বিএনপি নেতারা সন্ত্রাসীদের সুরক্ষা দেওয়ার অপচেষ্টা করছে : ওবায়দুল

মু্ক্ত কলাম

শঙ্কর মৈত্র

প্রকাশিত: ০০:৪৫, ৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

মু্ক্ত কলাম

সংবিধানের অষ্টম সংশোধনীর মাধ্যমে হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদ ঢাকার বাহিরে হাইকোর্টের ৬ টি বেঞ্চ করেছিলেন। একই সংশোধনীতে রাষ্ট্রধর্ম ইসলামও করেছিলেন। দেশের শীর্ষ আইনজীবীরা ঢাকার বাহিরে হাইকোর্টের বেঞ্চ স্থাপনের বিরোধিতা করে আন্দোলনে নামেন। এ নিয়ে সম্ভবত রিট হয় এবং হাইকোর্টের বেঞ্চ স্থাপনের অংশটুকু অবৈধ ঘোষণা করেন। রাষ্ট্রধর্ম নিয়ে বিখ্যাত আইনজীবীরা নিশ্চুপ ছিলেন, আদালতও নিশ্চুপ ছিলেন। 
এরশাদ অবৈধ ক্ষমতাদখলকারী ছিলেন। স্বৈরশাসকও ছিলেন। কিন্তু এরশাদের অনেক জনকল্যাণমুখী কাজও ছিল। এর মধ্যে অন্যতম ছিল উপজেলা পরিষদ গঠন, উপজেলা পর্যায়ে দেওয়ানী ও ফৌজদারি আদালত স্থাপন। আর হাইকোর্টকে বিকেন্দ্রীকরণ। ঢাকার বাহিরে ৬ টি অঞ্চলে হাইকোর্ট বেঞ্চ স্থাপন ছিল একটি অনন্য সিদ্ধান্ত। কিন্তু শীর্ষ আইনজীবীরা এর বিরোধিতা করেছিলেন শুধুমাত্র নিজেদের সুযোগ সুবিধার স্বার্থে। কারণ তাদের মামলা কমে যাবে,মামলা পরিচালনার জন্য ঢাকার বাহিরে যেতে হবে। কেউ ঢাকা ছাড়তে চাননা। সস্তা যুক্তি দিয়েছিলেন যে ঢাকার বাইরে হাইকোর্ট গেলে দুর্নীতি বাড়বে। দুর্নীতি কিন্তু কমে নি। 
দীর্ঘ ৩৫ বছর পর বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন সেই এরশাদের নীতিই বাস্তবায়ন করার সুপারিশ করতে যাচ্ছে। মিডিয়ায় প্রকাশিত খবরে জানা যায়, ড. ইউনুস সরকার গঠিত বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন দেশের সব বিভাগে হাইকোর্টের স্থায়ী বেঞ্চ এবং উপজেলা পর্যায়ে দেওয়ানী ও ফৌজদারি আদালত স্থাপনের সুপারিশ করতে যাচ্ছে। আমি এটাকে বিচার বিভাগের জন্য পজিটিভ হিসেবে দেখতে চাই। বিচারাঙ্গনে প্রায় অর্ধকোটি মামলা বিচারাধীন । হাইকোর্টে আছে কয়েক লাখ মামলা বিচারাধীন।  এই মামলা জট কমাতে হাইকোর্টকে বিকেন্দ্রীকরণ করা ছাড়া উপায় নেই। এ ছাড়া ঢাকায় এসে মামলা পরিচালনা করা বিচারপ্রার্থীর জন্য ব্যায়বহুল ও কষ্টসাধ্য । দিনের পর দিন তারিখ পড়ে, শুনানি হয়, অনিশ্চিত থাকে মামলা নিষ্পত্তি। চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় বিচারপ্রার্থীর।
হাইকোর্টের বেঞ্চ বিভাগীয় পর্যায়ে স্থাপন হলে এই অচলায়তনের অবসান ঘটতে পারে। একই ভাবে ফার্স্ট কোর্ট উপজেলা পর্যায়ে নেয়াও জরুরী। মামলার শুরুটা যদি উপজেলা পর্যায়েই শেষ হয়ে যায় তাহলে মানুষের দুর্ভোগ ও আর্থিক ক্ষতি কমবে। 
 আমি আবারও ধন্যবাদ জানাই বিচারবিভাগ সংস্কার কমিশনকে জনকল্যাণমুখী সুপারিশ করার জন্য। সামরিক শাসক এরশাদ যা ৪০ বছর আগে ভেবেছিলেন, সংবিধান সংশোধন করে বাস্তবায়ন করেছিলেন, তা কিছু আইনজীবীর সুবিধাবাদি ভুল সিদ্ধান্তে বাতিল করা হয়েছিল। আবার ফিরে আসুক সেই সময়। বিচার বিভাগ বিকেন্দ্রীকরণ হোক। এটা হবে জনকল্যাণমুখী সিদ্ধান্ত।