অন্তবর্তীকালীন সরকার ক্ষমতায় আসার পর ফ্যাসিষ্ট সরকারের দোসররা তাদের বোল পাল্টে ভিন্ন উপায়ে তাদের অপরাধ সংগঠিত করছে। এই দোসররা নীরিহ মানুষদের বিরুদ্ধে সংবাদপত্রে ভুয়া, ভিত্তিহীন মিথ্যা রিপোর্ট করিয়ে মামলার ভয় দেখিয়ে, সাধারন মানুষদের হয়রানি করে প্রতারণা করে যাচ্ছে।
ঢাকার অদুরে বাউনিয়া এলাকায় এক ত্রাসের নাম আবুল কালাম। হুন্ডি ও জাল ভিসায় মানবপাচারসহ নানা অনৈতিক অপকর্ম ও প্রতারণায় লিপ্ত থাকার ফলে সৌদি আরবে সাজাপ্রাপ্ত হয়ে বাংলাদেশে আসে এই প্রতারক। বাংলাদেশে এসে তৎকালীন স্বৈরাচারী সরকারের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হয়ে খুব অল্পদিনের মধ্যে আওয়ামী লীগের ক্যাডার বাহিনীর সক্রিয় সদস্য হিসাবে নেতৃস্থানীয়দের নজরে আসে। আবুল কালাম বঙ্গবন্ধু কালচারাল ফাউন্ডেশনের (কেন্দ্রীয় কমিটির) সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন এবং আওয়ামী লীগের ক্যাডার বাহিনীর একজন সক্রিয় সদস্য ছিলেন। বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে আবুল কালাম বাউনিয়া এলাকায় বিভিন্ন হলুদ সাংবাদিক ও তার ভাড়াটে দলবল নিয়ে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে।ফ্যাসিস্ট সরকারের আশীর্বাদপুষ্ট এই পেশাদার অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে খুন, রাহাজানি, চাঁদাবাজী, মাদক ব্যবসা, ভূমি দখল, নারীপাচার সহ হেন কোন অপকর্ম নেই যা সে করেনি।
ফ্যাসিষ্ট সরকারের পতনের পর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির পদ-ধারি ক্যাডার আবুল কালাম এখন তথাকথিত কিছু অনলাইন হলুদ সাংবাদিকদের নিয়ে একটি মিডিয়া সিন্ডিকেট তৈরি করে, নিজ উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য নিউজ করিয়ে বিভিন্ন সাধারণ ও নিরীহ মানুষের বিরুদ্ধে থানায় মামলার ভয় দেখাচ্ছে। প্রতারক আবুল কালাম এখন বর্তমান সরকারের ছত্রছায়ায় থেকে ক্ষমতা পাওয়ার নেশায় ব্যস্ত। গিরগিটির মতো মুহূর্তে রং পাল্টানো চতুর আবুল কালাম তার ক্ষমতার অপ-প্রয়োগ করে নিরীহ ও সাধারণ মানুষকে বিপদে ফেলছে ও তাদের জীবন বিপন্ন করছে। এ ব্যাপারে উত্তরা থানায় একাধিক অভিযোগ থাকায় তাকে হন্যে হয়ে খুঁজছে থানা পুলিশ বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা।
অবৈধ পন্থায় কোটি কোটি টাকার মালিক বনে যাওয়া পেশাদার আওয়ামী সন্ত্রাসী আবুল কালাম ঢাকার তুরাগ এলাকায় তার নিজের কেনা জমিতে রিয়েল এষ্টেট ডেভালপমেন্ট কোম্পানীর (নিজ কোম্পানি) সাথে শেয়ারের শর্তে মাইমুনা টাওয়ার নির্মাণ করেন। চুক্তি মোতাবেক আবুল কালাম ও তার সহযোগী ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে ফ্ল্যাট বিক্রি করে। কিন্তু ফ্ল্যাট বিক্রির পরে মায়মুনা টাওয়ারে বসবাসকারী ফ্ল্যাট মালিকগণের প্রতি ভূমিদস্যু আবুল কালামের আচরণ ছিল জুলুমবাজদের ন্যায়। ফ্ল্যাট মালিক ও তাদের পরিবারের সদস্যগণের গ্যারাজ ও লিফট ব্যবহারে কড়া নিয়ম আরোপ, ছাদে ওঠার নিষেধাজ্ঞা, ইউটিলিটি ও সার্ভিস চার্জের উপর অতিরিক্ত পরিমাণ টাকা ধার্য করা, ভবনের গ্যারেজের একাংশে মাদক কেনা বেচার আস্তানা তৈরি করা সহ ফ্ল্যাট মালিকদের গতিবিধি বাক্তিগত নিজস্ব সিসি ক্যামেরা দিয়ে নিয়ন্ত্রণে করা হয়। তার নিয়মের বাইরে কিঞ্চিত ভুল বা ব্যত্যয় ঘটলে ফ্লাট মালিকদের অপদস্থ সহ ফ্ল্যাট মালিকের গায়েও হাত তুলতে ছাড়েনা সে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেক ভূক্তভোগী তার এই নির্যাতনের কথা প্রতিবেদককে জানান। বিভিন্ন নারী অপরাধী চক্র দিয়ে বিভিন্ন কায়দায় সাধারণ মানুষদের ফাঁসিয়ে সে হাতিয়ে নেই লক্ষ লক্ষ টাকা বলে অভিযোগ করেছে বাউনিয়া এলাকার জনগন।
তার অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে গিয়ে এই সন্ত্রাসীর রোষানলে পড়েন, মীর মাহফুজুর রহমান নামে এক বেসরকারি কর্মকর্তা। মায়মুনা টাওয়ারে ফ্ল্যাট কেনার পর থেকে নানাভাবে সন্ত্রাসী ও প্রতারক আবুল কালামের কাছে হয়রানির স্বীকার হচ্ছেন এই কর্মকর্তা। সন্ত্রাসী আবুল কালাম তাকে একাধিক বার পথে ঘাটে অস্ত্র ও লাঠিসোটা দিয়ে শারিরীকভাবে আঘাত করার কারণে মাহফুজুর রহমান জখমপ্রাপ্ত হয়েছেন। ভূয়া ও মিথ্যা মামলায় ফাসিয়ে তার ও তার পরিবারের জীবন বিষিয়ে তুলেছেন। চক্রান্তের শিকার আরও বেশ ক’জন।
পেশাদার অপরাধী আবুল কালাম ২০২২ সালে অপরাধী চক্র দিয়ে তাকে একবার অপহরণের চেষ্টা করে এবং ডিবি পুলিশের হাতে ধরা পড়ে তখন এক অদৃশ্য শক্তিতে ছাড়া পায়। বিগত ৫ বছরের অধিক সময় ধরে নানা কায়দায় বিভিন্ন মামলা-হামলায় জর্জরিত হয়ে অত্যন্ত বিনয়ী মাহফুজুর রহমান শেষ পর্যন্ত বাধ্য হয়ে নিজের কষ্টের জমানো টাকায় কেনা ফ্ল্যাটটি ছেড়ে দিয়ে ভাড়া বাসায় থাকেন।
খোজখবর নিয়ে জানা যায়, উচ্চাবিলাসী আওয়ামী অস্ত্রধারী অপরাধী আবুল কালামের দ্বারা তার নিজ এলাকা তুরাগসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে অপরাধ সংগঠিত করে। পেশাদার সন্ত্রাসী আবুল কালামের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন থানায় ও জেলায় হত্যা মামলাসহ একাধিক মামলা চলমান তাছাড়া তার বিরুদ্ধে এক ডজনের বেশি সাধারণ ডায়েরি করা হয়। উল্লেখ্য তার এহেনো কর্মকাণ্ডের অন্যতম সহযোগী হল ময়মুনা টাওরের ফ্ল্যাট মালিক ফ্যাসিষ্ট সরকারের পটুয়াখালী- ৩ আসনের সাবেক এমপি এস এম শাহাজাদা এর ঘনিষ্ট বন্ধু লিফট ব্যবসায়ী দেলোয়ার হোসেন। এ ব্যাপারে বহুবার ফোন দেয়া হলেও কালামকে পাওয়া যায়নি। থানায় খোঁজ নিলে একজন পুলিশ কর্মকর্তা ধারণা করেন, চারপাশের অবস্থা দেখে কালাম গা ঢাকা দিয়েছে।