বাংলাদেশ ও ভারতের সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নের লক্ষ্যে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা সংক্রান্ত ৫ম বার্ষিক সংলাপ ঢাকায় শুরু হয়েছে। সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের তত্ত্বাবধানে আজ ঢাকায় এই সংলাপ শুরু হয়।
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ২০১৭ সালের ৮ এপ্রিল স্বাক্ষরিত প্রতিরক্ষা সমঝোতা স্মারক অনুযায়ী তিন বাহিনীর সাধারণ বিষসমূহ বার্ষিক ডিফেন্স ডায়লগ (এডিডি) এর মাধ্যমে প্রক্রিয়াকরণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। উক্ত সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ও ভারতের সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নের লক্ষ্যে প্রতি বছর এডিডি ভারত ও বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। এ পর্যন্ত উভয় দেশের মধ্যে মোট ৪টি এডিডি অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত বছর ৪র্থ এডিডি ভারতে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এরই ধারাবাহিকতায় ৫ম এডিডি সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের তত্ত্বাবধানে ঢাকায় অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
এই সংলাপে মূলতঃ উভয় দেশের মধ্যে পারস্পারিক সামরিক সহযোগিতা, দ্বিপাক্ষিক সামরিক বিষয়সমূহ, সামরিক শিল্প, দুর্যোগ মোকাবেলা ও মুক্তিযুদ্ধ সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনা করা হবে। বাংলাদেশের পক্ষে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেঃ জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান এবং ভারতের পক্ষে ভারতের প্রতিরক্ষা সচিব শ্রী গিরিধর আরমান, স্ব স্ব প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব প্রদান করছেন। এর আগে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার (পিএসও) লেফটেন্যান্ট জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের সাথে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগে ভারতের প্রতিনিধিদলের প্রধান সৌজন্য সাক্ষাত করেন।
উভয় দেশের মধ্যকার টিআরই সার্ভিস স্টাফ টক (টিএসএসটি) আগামীকাল ২৯ আগস্ট সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের তত্ত্বাবধানে অনুষ্ঠিত হবে। উল্লেখ্য, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা সহযোগিতা বর্তমানে অত্যন্ত নিবিড়। বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীকে প্রতিরক্ষা উন্নয়ন ও প্রশিক্ষণে সহযোগিতা প্রদানের জন্য ভারতের অব্যাহত সহায়তার বিষয়টি সুস্পষ্ট। প্রতিবছর বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর অনেক সদস্য ভারতের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে। একইভাবে ভারতের সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরাও বাংলাদেশে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে থাকে। দুই দেশের সশস্ত্র বাহিনী বিভিন্ন পর্যায়ে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে একসাথে কাজ করে আসছে। এছাড়াও উচ্চ পর্যায়ের সামরিক সফর বিনিময় দুই দেশের মধ্যকার সামরিক সহযোগিতার একটি অন্যন্য বৈশিষ্ট্য।
বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা সুদৃঢ় ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে আছে, যা ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময়ে তৈরী হয়েছে। উভয় দেশের এই সম্পর্ক বহুমাত্রিক, বহুমুখী এবং সর্বদা বিকাশমান। এছাড়াও, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক সহ সকল ক্ষেত্রে এ দুই দেশের সম্পর্ক অত্যন্ত দৃঢ়। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ভারতের সাথে সামরিক ও নিরাপত্তা বিষয়ক সম্পর্কের বিভিন্ন ক্ষেত্রে উল্লেখ্যযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। এই অগ্রগতি পারস্পরিক সহযোগিতা ও বন্ধুত্বকে একটি অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছে।